Posts

Showing posts from July, 2019

পঁচিশ টাকায় ফুলের গল্প – সাকিব জিযান

Image
বাসা থেকে বেরিয়ে আস্তে আস্তে হাঁটছি। উদ্দেশ্য জিয়া হল। কারণ ওইখানে মাত্র পঁচিশ টাকায় দুপুরের খাবার পাওয়া যায়। পকেটের টাকা বাঁচানোর তীব্র ইচ্ছার কারণেই এই ভর দুপুরে এক কিলো রাস্তা হেঁটে এক বেলার খাবার খেয়ে আসতে হচ্ছে। শুক্রবারের দুপুরে রাস্তায় মানুষজন নাই বললেই চলে। এমনেই মগজ ঝলসানো রোদ। তার উপরে যদি পিচ ঢালা রাস্তায় হাঁটতে থাকি, তাহলে মরীচিকার উপরে দাঁড়ানো মানুষটাকেও নিজের আপনজন মনে হয়। প্রথমে বড় রাস্তা তারপর ছোট রাস্তা তারপর আবার বড় রাস্তা। রাস্তার আর শেষ হয় না। এইরকম সময় কোন সঙ্গী ছাড়া হাঁটতে আসলেই কস্ট লাগে। হলে পৌঁছালাম একেবারে শেষের দিকেই। ভাগ্য ভালো খাবার শেষ হয়নি তখনও। দানবের মত গলা পর্যন্ত একগাদা খাবার খেয়ে জিয়া হলের বাইরে এলাম। চমৎকার ঝাউ গাছ গুলোর কৃত্রিম সৌন্দর্য ভালোই লাগে। কিন্তু সেই সৌন্দর্য এখন আবার বাসায় ফেরত যাওয়ার শক্তি আর সাহস যোগাতে সাহায্য করছে না। তাই ভাবলাম একটু জিরিয়ে নেই জিয়া হলের কাছের পুকুর পাড়টায়। এই ভর দুপুরে কাউকে পুকুর পাড়ে দেখা যাওয়ার কথা না। কিন্তু না একজন মানুষ আছে। আর আছে বড় গাছগুলোর নিচে কয়েকটা বেঞ্চ আর একটা দোলনা। আস্তে এগিয়ে যেয়ে দোলনায় বসল...

একটি প্রেশার কুকার রম্য – সাকিব জিযান

Image
একটা অদ্ভুত গ্রামের মানুষদের গল্প এটা। সেই গ্রামের মানুষ সবকিছুতেই প্রতিযোগিতা করে, ভালো মন্দ কিংবা ভান্দ(ভালো আর মন্দের মিশ্রণ) সবকিছুতেই। তো গ্রামের মানুষ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাব নিয়েও প্রতিযোগিতা করবে, সেটা স্বাভাবিক কিন্তু অদ্ভুত। আর আমাদের গল্প যে আসবাবটা নিয়ে তা হলো একটা অদ্ভুত পাতিল।  গল্পের শুরুটা হয় মফিজ মিয়ার বাড়িতে যেদিন মফিজ মিয়া শহর থেকে একটা প্রেশার কুকার কিনে আনলেন। অনেক দামি এই পাতিলে সবকিছু রান্না হয় অনেক তাড়াতাড়ি। তার স্ত্রীতো বেজায় খুশি, আর সবার পাতিলের চেয়ে তার পাতিল সেরা! এর চেয়ে বড় কথা পাতিলটা শীষ দেয়। মফিজ মিয়াও বেজায় খুশি। একদিন মফিজ মিয়ার স্ত্রী রান্নার জন্য মাংস বসিয়ে কোন এক কাজে গিয়ে ভুলে যায় রান্নার কথা। যখন মনে পরে, রান্না ঘরে দৌড়ে আসে সে। তত ক্ষনে মাংস হাড় সবকিছু গলে কি এক অবস্থা! কিন্তু মফিজ দম্পতি তাতে খারাপ টা না দেখে ফলাও করে তাদের পাতিলের গুন গাইতে থাকে, পাতিলটা হাড়কেও গলিয়ে নরম করতে পারে! এইপর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু মফিজ মিয়ে একদিন বলেই ফেললেন, তাদের পাতিল পাথর পর্যন্ত সিদ্ধ করতে পারে। এবার গ্রামের টনক...

স্বপ্ন - সাকিব জিযান

Image
যান্ত্রিকতা আর কোলাহলের ভীড়ে মত্ত একটা ট্রেন ছুটে চলছে যান্ত্রিকতার দিকেই। প্রচুর ভীড়, যেন আর একজন মানুষ বেশি উঠলেও তা ইস্পাত ট্রেনের শরিরে ফাটল ধরিয়ে দিবে। একটি ছোট ছেলে আমড়া বিক্রি করছিল সেই ট্রেনের  অমানবিক ভীড় ঠেলে। স্বপ্ন দেখার এই বয়সে সে যে স্বপ্ন দেখেনা তা না। কিন্তু তাতে আঘাত হানে তার অতীত। একসময় সে স্কুলে যেত, বাবা বিহীন সে সংসারে তা ছিল ট্রেনের এই ভীর ঠেলার মতোই কঠিন। তবুও সে হাল ছাড়ে নি। কারণ তখন তার মা তাকে স্বপ্ন দেখাতো। কিন্তু তার স্বপ্ন ভাংগে। মিথ্যা চুরির অপবাদে যেদিন আক্কাস আলী তাকে বেদম প্রহার করে, তারপর আর সে স্কুলে যায় নি। আজ আমড়া বিক্রির সময়ও সে স্বপ্ন দেখে, একদিন এই ট্রেনটা তার নিজের হবে। তখন আর অন্য কোন আমড়াওয়ালা তাকে ধাক্কা দিতে পারবে না। অনেক দিন পর সে একটু বড় হয়। স্থানীয় বাজে ছেলেরা তাকে এখন নেতার নজরে দেখে। আরও অনেক বছর পরের কথা। এখন আর সে বালক নেই। হয়েছে অনেক বড়। এখন আর সে ট্রেনের মালিক হবার মতো ছোট স্বপ্ন দেখে না। কারন এখন সে একটা পুরো স্টেশনের মালিক। তার ভয়ে উঠে বসে সমগ্র স্টেশনের হকার-শ্রমিক সবাই। আক্কাস আলী জানেও না তার ছাত্র আজ ক...