পঁচিশ টাকায় ফুলের গল্প – সাকিব জিযান
বাসা থেকে বেরিয়ে আস্তে আস্তে হাঁটছি। উদ্দেশ্য জিয়া হল। কারণ ওইখানে মাত্র পঁচিশ টাকায় দুপুরের খাবার পাওয়া যায়। পকেটের টাকা বাঁচানোর তীব্র ইচ্ছার কারণেই এই ভর দুপুরে এক কিলো রাস্তা হেঁটে এক বেলার খাবার খেয়ে আসতে হচ্ছে। শুক্রবারের দুপুরে রাস্তায় মানুষজন নাই বললেই চলে।
এমনেই মগজ ঝলসানো রোদ। তার উপরে যদি পিচ ঢালা রাস্তায় হাঁটতে থাকি, তাহলে মরীচিকার উপরে দাঁড়ানো মানুষটাকেও নিজের আপনজন মনে হয়। প্রথমে বড় রাস্তা তারপর ছোট রাস্তা তারপর আবার বড় রাস্তা। রাস্তার আর শেষ হয় না। এইরকম সময় কোন সঙ্গী ছাড়া হাঁটতে আসলেই কস্ট লাগে।
হলে পৌঁছালাম একেবারে শেষের দিকেই। ভাগ্য ভালো খাবার শেষ হয়নি তখনও। দানবের মত গলা পর্যন্ত একগাদা খাবার খেয়ে জিয়া হলের বাইরে এলাম।
চমৎকার ঝাউ গাছ গুলোর কৃত্রিম সৌন্দর্য ভালোই লাগে। কিন্তু সেই সৌন্দর্য এখন আবার বাসায় ফেরত যাওয়ার শক্তি আর সাহস যোগাতে সাহায্য করছে না। তাই ভাবলাম একটু জিরিয়ে নেই জিয়া হলের কাছের পুকুর পাড়টায়।
এই ভর দুপুরে কাউকে পুকুর পাড়ে দেখা যাওয়ার কথা না। কিন্তু না একজন মানুষ আছে। আর আছে বড় গাছগুলোর নিচে কয়েকটা বেঞ্চ আর একটা দোলনা। আস্তে এগিয়ে যেয়ে দোলনায় বসলাম। ওপাশে হাওয়া খেতে পুকুর পাড়ে আসা মানুষটা হঠাৎ উঠে চলে গেল।
বসে দোল খাচ্ছি আর ভাবছি। কোন বাতাস নাই কেন? এমনেই গরমে জীবন অতিষ্ঠ। কোথা হতে যেন শব্দ আসছে। অনেক শব্দ। একটু খেয়াল করার চেষ্টা করলাম। ইদানিং আমি কমলাকান্তের মত সব কিছুর কথাই কিভাবে যেনো শুনতে পাই। যদিও আমি আফিং খাই না, ভাত খাই।
হঠাৎ কে যেন চেচিয়ে উঠলো, “আমাদের সভায় আড়িপাতা হচ্ছে !”
তাকিয়ে দেখলাম কয়েকটা ফুল পড়ে আছে রাস্তায়। না, আসলে কয়েকটা না। হাজার হাজার ফুল পুরো রাস্তাকে লাল কার্পেটের মত জড়িয়ে রেখেছে।
আমি বলে উঠলাম, “বাহ! রাস্তাটা বেশ সুন্দর তো!”
কথাটা শুনে হাজার হাজার ফুল তীব্র তিরস্কার করে উঠল আমায়, “রাস্তাটা তোমার সুন্দর লাগলো কিন্তু রাস্তাটা যাদের জন্য সুন্দর তাদের তো তুমি বাহাবা দিলে না”
মনে মনে ভাবলাম বড় বোকামি করে ফেলেছি। তাই ফুলগুলো এখন যা বলে তা শুনা ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই। ফুলগুলো বলে উঠলো, তুমি টাকা দিয়ে ফুল কিনো, গুণিজনকে শ্রদ্ধা জানাতে। কিন্তু সেই ফুলই যদি রাস্তায় পড়ে থাকে, তাহলে দেখেও না দেখার ভান কর। আর ফুলকে নাইবা ভালবাসলে। যাদের তুমি ফুল দাও, তাদের কি আসলেই তুমি শ্রদ্ধা কর?
আমি বললাম, কেন করবনা?
ফুলগুলো আদেশের স্বরে বলল, শহীদ মিনারে যেয়ে দেখ তোমার দেওয়া ফুল শুকিয়ে গেছে সেই কবে। ভালবাসার ফুল কখনও শুকায় না।
হঠাৎ ঘোর কাটলো মোবাইলের শব্দে। হকচকিয়ে উঠলাম আমি। সামনে তাকিয়ে দেখি পুরো রাস্তা শুকনো পাতায় ভর্তি, ফুলতো নেই কোথাও।
সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি হোস্টেলে ফেরা দরকার।
কয়েকদিন পর ইংরেজি পরিক্ষা দিচ্ছি। মেধা পাচার সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখতে হবে। হঠাৎ সেদিনের ফুলগুলোর কথা মনে পড়ল। আসলে আমরা আমাদের দেশটাকে ফুলগুলোর মতই ভালবাসি।
এমনেই মগজ ঝলসানো রোদ। তার উপরে যদি পিচ ঢালা রাস্তায় হাঁটতে থাকি, তাহলে মরীচিকার উপরে দাঁড়ানো মানুষটাকেও নিজের আপনজন মনে হয়। প্রথমে বড় রাস্তা তারপর ছোট রাস্তা তারপর আবার বড় রাস্তা। রাস্তার আর শেষ হয় না। এইরকম সময় কোন সঙ্গী ছাড়া হাঁটতে আসলেই কস্ট লাগে।
হলে পৌঁছালাম একেবারে শেষের দিকেই। ভাগ্য ভালো খাবার শেষ হয়নি তখনও। দানবের মত গলা পর্যন্ত একগাদা খাবার খেয়ে জিয়া হলের বাইরে এলাম।
চমৎকার ঝাউ গাছ গুলোর কৃত্রিম সৌন্দর্য ভালোই লাগে। কিন্তু সেই সৌন্দর্য এখন আবার বাসায় ফেরত যাওয়ার শক্তি আর সাহস যোগাতে সাহায্য করছে না। তাই ভাবলাম একটু জিরিয়ে নেই জিয়া হলের কাছের পুকুর পাড়টায়।
এই ভর দুপুরে কাউকে পুকুর পাড়ে দেখা যাওয়ার কথা না। কিন্তু না একজন মানুষ আছে। আর আছে বড় গাছগুলোর নিচে কয়েকটা বেঞ্চ আর একটা দোলনা। আস্তে এগিয়ে যেয়ে দোলনায় বসলাম। ওপাশে হাওয়া খেতে পুকুর পাড়ে আসা মানুষটা হঠাৎ উঠে চলে গেল।
বসে দোল খাচ্ছি আর ভাবছি। কোন বাতাস নাই কেন? এমনেই গরমে জীবন অতিষ্ঠ। কোথা হতে যেন শব্দ আসছে। অনেক শব্দ। একটু খেয়াল করার চেষ্টা করলাম। ইদানিং আমি কমলাকান্তের মত সব কিছুর কথাই কিভাবে যেনো শুনতে পাই। যদিও আমি আফিং খাই না, ভাত খাই।
হঠাৎ কে যেন চেচিয়ে উঠলো, “আমাদের সভায় আড়িপাতা হচ্ছে !”
তাকিয়ে দেখলাম কয়েকটা ফুল পড়ে আছে রাস্তায়। না, আসলে কয়েকটা না। হাজার হাজার ফুল পুরো রাস্তাকে লাল কার্পেটের মত জড়িয়ে রেখেছে।
আমি বলে উঠলাম, “বাহ! রাস্তাটা বেশ সুন্দর তো!”
কথাটা শুনে হাজার হাজার ফুল তীব্র তিরস্কার করে উঠল আমায়, “রাস্তাটা তোমার সুন্দর লাগলো কিন্তু রাস্তাটা যাদের জন্য সুন্দর তাদের তো তুমি বাহাবা দিলে না”
মনে মনে ভাবলাম বড় বোকামি করে ফেলেছি। তাই ফুলগুলো এখন যা বলে তা শুনা ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই। ফুলগুলো বলে উঠলো, তুমি টাকা দিয়ে ফুল কিনো, গুণিজনকে শ্রদ্ধা জানাতে। কিন্তু সেই ফুলই যদি রাস্তায় পড়ে থাকে, তাহলে দেখেও না দেখার ভান কর। আর ফুলকে নাইবা ভালবাসলে। যাদের তুমি ফুল দাও, তাদের কি আসলেই তুমি শ্রদ্ধা কর?
আমি বললাম, কেন করবনা?
ফুলগুলো আদেশের স্বরে বলল, শহীদ মিনারে যেয়ে দেখ তোমার দেওয়া ফুল শুকিয়ে গেছে সেই কবে। ভালবাসার ফুল কখনও শুকায় না।
হঠাৎ ঘোর কাটলো মোবাইলের শব্দে। হকচকিয়ে উঠলাম আমি। সামনে তাকিয়ে দেখি পুরো রাস্তা শুকনো পাতায় ভর্তি, ফুলতো নেই কোথাও।
সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি হোস্টেলে ফেরা দরকার।
কয়েকদিন পর ইংরেজি পরিক্ষা দিচ্ছি। মেধা পাচার সম্পর্কে অনুচ্ছেদ লিখতে হবে। হঠাৎ সেদিনের ফুলগুলোর কথা মনে পড়ল। আসলে আমরা আমাদের দেশটাকে ফুলগুলোর মতই ভালবাসি।
Joss😌lekhoker kolpona shokti probol
ReplyDeleteধন্যবাদ...😊
DeleteThis story is an amazing blend of emotion... The name is just perfect.... Believe me, I have lost my words to say how it is.... সামনে তাকিয়ে দেখি পুরো রাস্তা শুকনো পাতায় ভর্তি, ফুলতো নেই কোথাও।
ReplyDeleteসন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি হোস্টেলে ফেরা দরকার।.... These lines are more than something but feeling.. Loved it...
ধন্যবাদ...😊
DeleteWonderful.
ReplyDeleteThanks...😃
Delete